সময় বহন ক’রে এনেছে প্রচারপত্র,--

    আগামী কালবোশেখী ঝড়ে,-বিলি হবে ঘরে ঘরে ;

    --সবাই জেনে যাবে,-‘গৃহযুদ্ধ দূরে নয় ’ ;--

    --লুটের মাল ভাগাভাগি নিয়ে নিজদলে

    কোন্দলময় গৃহযুদ্ধের নিত্য পূর্বাভাস ॥

    ঐ প্রচারপত্রেই পাওয়া যাচ্ছে

    আশ্বাসময় আগাম প্রকাশ,--

    --আত্মঘাতি গৃহযুদ্ধ হঠাৎ-ই থেমে যাবে

    এবং ধ্বংস-স্তুপ ফেলে রেখে চ’লে যাবে ;

    জড়িতরা ধ্বংসস্তুপের উপাদান হবে,-আর,--

    -জীবিতরা মাত্রা জেনে যাবে নিজেদের অক্ষমতার ॥

    ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে প্রতারণাময় ব্যবধান,

    --যত দলগত ব্যবধান আছে,-হবে বিনাশপ্রাপ্ত ;

    -শুধু একটাই ব্যবধান থাকবে,

    --যা’ স্থির,-চিরন্তন,

    --‘কোনো মানুষ-ই নয় অন্যের মতো’-॥

    মানুষে মানুষে সত্যিকার ব্যবধানটুকু সম্বল ক’রে,

    --ধ্বংস-স্তুপের ওপর দিয়ে,-সৃষ্টির বাহন,

    -যুগের গয়না ভাসবে সময়ের স্রোতে ;

    --সকলেই স্বতন্ত্র-বৈঠা আপন হাতে

    তুলে নেবে স্বেচ্ছায় ॥

    হাল ধরার লোভে কেউ যদি বৈঠা এড়িয়ে যায়,

    --ধমকিয়ে তাকে সরিয়ে দেওয়া হবে তখনি,

    --যেখানে যথার্থ মানুষের হবে-না মানহানী,

    --অযোগ্য উঠে গেলে যোগ্যের স্থানে ;

    -নামিয়ে আনা হবে তাকে,-হেঁচ্কা টান টেনে ॥

    -‘নেবো না, বৈঠা নেবো না,-হাল চাই হাল চাই,’-

    -এ-ধরণের বিশ্রী ঘ্যানঘ্যানানি কৌশলে থামিয়ে

    শুনিয়ে দেয়া হবে তাকে কঠোর সতর্কবাণী,-

        -‘ওহে ক্ষুদে বাছুর মহাজন,-চতুরের পোনা,

        -এবারে আর ভুল কোরো না,’-



    -প্রত্যক্ষদর্শীর অভিজ্ঞতাকে যে’জন মানতে চাইবে না,

    -প্যাঁচানো তার সুচতুর ল্যাজটা ধ’রে

    টেনে সোজা ক’রে অভিভাবকেরা স্নেহভরে

    করবে শাসন,-কিম্বা সকলে সমস্বরে

    ঠাট্টার ভঙ্গিতে বলবে,--

        --‘বৈঠাখানা ফেলে দিয়ো না বাছা,

        -এখনো তুমি যথেষ্ট কাঁচা,-

        -নিজেকে নীলরক্তধারী আভিজাত্যধারী নরাধম

        সাজানোর ঝুঁকি নিয়ো না,--ফিরে দ্যাখো,

        -ফিরে দ্যাখো নিজ-চোখে পেছনে,

        --পিছনের ঐ ধ্বংসস্তুপখানা।--

        -তুমি আমাদের যত্নে-লালিত,-আদরে-আশ্রিত,

        --তুমিও লাল রক্তধারী;--ছুঁয়ো না হে,

        --খবরদার! -হাল ছুঁ’তে যেয়ো না আগেভাগে,

        --কোরো না বাড়াবাড়ি।’---



    আলতোভাবে তার কাঁধে চাপড়িয়ে বলা হবে,

        -‘অভয় নিয়ে যাও,-নিয়ো না যন্ত্রণা,-

        --যতক্ষণ আমরা না-পাঠাচ্ছি,

        -ভুলেও একা একা ধরতে যেয়ো না,-

        -ঝুঁকিপূর্ণ হালখানা তাড়নার স্বেচ্ছাচারে

        একা একা ধোরো নাকো আর,-

        --দ্যাখো চেয়ে খোকা,-চেয়ে দ্যাখো,

        -গন্তব্য নিজেরাই ঠিক ক’রে নিচ্ছে এবার

        দায়ভারবাহী ধৈর্যশীল অভিভাবকেরা,

        -যারা অন্যের দোষ ঘাঁটার ব্যাপারে,--

        -অক্ষমতাই শুধু দেখিয়ে গ্যাছে বারে বারে,

        ঐ নির্ভরযোগ্য,-নিরপেক্ষের পক্ষপাতী,

        অভিজ্ঞ অভিভাবকেরা,

        -ত্যাড়া নয় যাদের ঘাড়;

        -এখানে এই গয়নায়,-বিশ্বাসঘাতক নয়

        আমাদের সম্মিলিত যত দাঁড় ॥



    ‘ডানে’ অথবা ‘বাঁয়ে’ ছলাৎ ছলাৎ দাঁড়গুলোর

    যেকোনো একখানা তোমাকে চায়।

    হতাশামুক্ত উচ্ছ্বসিত তুমি,-তোমাকেই চাই,

    -চাই তোমাকেই যারা চলন্ত এই ভাসমান গয়নায় ॥

    তোমাকে পরখ ক’রে নেওয়া হবে

    তোমার ‘স্বতন্ত্র বৈঠা’ চালনায়।

    -যদি সন্তুষ্ট করতে পারো

    আপন পেশাগত যোগ্যতায় সমতালে,--

    -আর,-দেখাতে পারো

    দাঁড়-ঠেলায় যোগ্যতা সমকালে,-

    -এবং ,-সংখ্যাগরিষ্ঠ অভিভাবকেরা সমর্থন নিয়ে

    তোমার পক্ষে দাঁড়ালে,---

    তবেই তোমাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে হালে,

    --ভাসমান গয়নার দিক-নির্দেশক হালে।-’



   রঙ্গপুর -০২/০৮/১৯৮৪ খ্রি: